বিটিসিএল এর তারে বন্দি মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন কাজ। গাংনী উপজেলার জোড়পুকুরিয়া থেকে চোখতোলার মাঠ পর্যন্ত রাস্তা একেবারেই খানা খন্দে ভরে গেছে। উঠে গেছে রাস্তার উপরের সব খোয়া।ফলে এ আঞ্চলিক মহা সড়কটি চলাচলের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই কোনো কোন না কোনো দূর্ঘটনা ঘটছে এখানে। অথছ, সারা বছরই এই স্থানটি মেরামতের জন্য খরচ দেখানো হয় লক্ষ লক্ষ টাকা। মাত্র ৯৪০ মেরামতের নামে মিটার রাস্তা মেরামতের নামে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের লুটপাট। নেই বিটুমিন, নেই আলকাতরা শুধুমাত্র ভাঙড়ি ইট দিয়ে সারা বছরই চলে রাস্তা মেরামত। আর বাজেট দেখানো হয় লক্ষ লক্ষ টাকা। অথচ, প্রতিদিনই ভাঙ্গা-চোরা, খানা-খন্দে ভরা বিকল রাস্তায় ঘটছে ছোট খাটো দূর্ঘটনা। কোন না কোন যানবাহন নষ্ট হচ্ছে প্রায়সই। সমস্যায় পড়ছে স্থানীয়সহ দূরপাল্লার যানবাহন। এ চিত্র মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গাংনী উপজেলার চোখতোলার মাঠ নামক স্থানের। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে রাস্তা মেরামতের বাজেটের কথা জানতে চাইলে সাফ জানান এব্যাপারে বলা যাবেনা। কারন, চোখতোলার জন্য কোনো আলাদা বাজেট করা যায়না। স্থানীয়রা জানান, মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের গাংনীর চোখতোলা নামক স্থানের ৯৪০ মিটার রাস্তার সমস্যা অন্তত ১০ বছর ধরে। শুধুমাত্র এই স্থানটির মেরামতের জন্য প্রতি বছরই লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ দেখানো হয়। অথচ, এখানে স্থায়ী সমাধানের কোনো কার্যক্রম নেয়া হয় হয়নি সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে। দেখা গেছে, সড়কটির চোখতোলা থেকে শুরু হয়ে জোড়পুকুরিয়া পর্যন্ত মাঠের ৯৪০ মিটার একবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। মাঝে মাঝে ২০ ফিট, ৩০ ফিট পর্যন্ত গর্ত আবার কোথায় কোথায় রাস্তর পাটাতন পর্যন্ত কোন কিছুই নেই। এখানে পাকা রাস্তা ছিলো বলে মনে হয়না। এক ফিট দুই ফিট গর্ত পার হতে গিয়ে বাস ট্রাকসহ ছোট খাটো ভ্যান, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, আলগামন, নসিমন, ইজিবাইক উল্টে পড়ে যায়। প্রতিবছরই ওইস্থানে কোন রকম চলাচলের জন্য আধা ভাঙা ইট বিছিয়ে দিয়ে ব্যয় দেখানো হয় লাখ লাখ টাকা। এছাড়া মেহেরপুর থেকে কুষ্টিয়ার খলিশাকুন্ডি নামক স্থান পর্যন্ত সারাবছরই ছোট ছোট গর্তে পাথর দিয়ে তার ওপর আলকাতরা ছিটিয়ে চালিয়ে থাকেন পুটিংয়ের কাজ। মেহেরপুর জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে, মেহেরপুরের-গাংনী-কুষ্টিয়া সড়কটির পূনার্ঙ্গভাবে কাজ হয়েছিল বছর দশেক আগে। তারপরে আর রাস্তাটি মেরামতের কাজ করা হয়নি। সড়কটির গাংনী শহরের মহিলা কলেজ মোড়, উত্তরপাড়া এলাকা ও চোখতোলা মাঠের ৯৪০ মিটার একবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গত বছরে সড়কটি স্থায়ীভাবে সংস্কার করণের লক্ষ্যে ৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে টেন্ডার করা হয়। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারী কাজটির কার্যাদেশ পান মেহেরপুরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স জহিরুল লিমিটেড। কিন্তু রাস্তার পাশে ভূগর্ভস্থ টেলিফোন লাইন থাকার কারনে কাজটি শুরু হয়েও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক বিভাগ। সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, রাস্তার পাশে ভুগর্ভস্থ টিঅ্যান্ডটি তার না সরানোর কারণে রাস্তাটির সংস্কার কাজ শুরু হলেও সেটি বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি জানান, রাস্তার পাশেই ভুগর্ভস্থ টিঅ্যান্ডটি তার থাকায় কাজ বন্ধ করে দেয় বিটিসিএল। টিঅ্যান্ডটির তার সরানোর জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরে দুইবার চিঠি দিয়েছি। কিন্তু সে চিঠির এখনও কোন সাড়া মেলেনি। তবে ঠিকাদারের সঙ্গে কথা হয়েছে, কিছুদিনের মধ্যেই বিশেষ ব্যবস্থায় আবার কাজ শুরু করা হবে। এদিকে বাংলাদেশ বিটিসিএলের মেহেরপুরের সহকারী প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান জানান, সড়ক বিভাগের চিঠি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ আমদের ক্ষতিপূরণ না দিলে এখনিই তার সরানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিষয়টি আবারও বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দেখবো কিভাবে সরানোর ব্যবস্থা করা যায়। জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম জানান, রাস্তাটি সংস্কারে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিরসনের ব্যবস্থা করা হবে।