কুষ্টিয়া পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ম. আ রহিমের ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য পারিবারিক উদ্যোগে ৭ সেপ্টেম্বর সোমবার বাদ আসর কুষ্টিয়া শহরস্থ আড়ুয়াপাড়া ছাখাবী মসজিদে মিলাদ মাহ্ফিলের আয়োজন করা হয়। উক্ত মিলাদ মাহ্ফিলে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন আড়ুয়াপাড়া ছাখাবী মসজিদে ঈমাম শফিকুল ইসলাম। এ সময় ম. আ রহিমের জ্যেষ্ঠ পুত্র পৌর ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র পরিচালক হাজী মোঃ আখতারুজ্জামান, পৌর ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রইচ উদ্দিন আহমেদ, সহ-সভাপতি ডাঃ আব্দুল মজিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামছুল আরেফিন খান, আওয়ামীলীগ নেতা হারুন অর রশিদ মিহাত, আরিক মাহমেদ অন্তু, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ফয়সাল হোসেন চঞ্চল, যুবলীগ নেতা শরিফুল ইসলাম বার্মিজ, শহর ছাত্রলীগের আহবায়ক হাসিব কৌরাইশী, ছাত্রলীগ নেতা শৈয়েব সৈনিক সহপৌরবাসী ও শুভানুধ্যায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। সার্বিক ব্যাবস্থাপনায় ছিলেন কুষ্টিয়া পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ম. আ রহিমের নাতী ছেলে কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সাবেক পরিচালক ও যুবলীগ নেতা মোঃ রাকিবুজ্জামান সেতু। উল্লেখ্য, ব্যক্তি জীবনে অমায়িক সজ্জন ও সদালাপী ম. আ রহিম ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জন নির্বাচিত পৌর চেয়ারম্যান। ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের ৮ জানুয়ারি তিনি আড়ুয়াপাড়ার বিশিষ্ট সমাজসেবক জেহের আলী মন্ডল ও ময়জান নেছার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট বেলা থেকেই তিনি সমাজ সেবামূলক ও সাংস্কৃতি কর্মকান্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হন। পঞ্চাশ থেকে ষাটের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত তিনি মোহিনী মিল রঙ্গমঞ্চ ও পরিমল থিয়েটারের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। এ দু’টি প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু নাটকেও তিনি সফল ভাবে অভিনয় করেন। ষাটের দশকের প্রথম দিকে তিনি “পাকিস্থান যাদুকর পরিষদ” এর রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি ছিলেন (কুষ্টিয়া তখন রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত ছিল)। সে সময় পাকিস্থানের খ্যাতনামা যাদুশিল্পী আলাদীনের ছাত্র হিসেবে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন মঞ্চে ম্যাজিক প্রদর্শন করেন। ১৯৬০-১৯৬১ সময়ে তিনি পাঠাগার, সংস্কৃতি ও সমাজ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসাবে “মিতালী পরিষদ” প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তিনি ১৯৬৪ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্তকুষ্টিয়া ট্রান্সপোর্ট সিন্ডিকেট এর সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত বিআরটিসি’র খুলনা বিভাগীয় পাবলিক ডাইরেক্টর ছিলেন। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনে জড়িত থাকার পাশাপাশি তিনি জনপ্রতিনিধি হিসাবে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন। ১৯৫২ সাল থেকে তিনি একাধিক মেয়াদে পৌরসভার ওয়ার্ড কমিশনারে ছিলেন। এছাড়াও ১৯৬৪’র ফেব্র“য়ারি থেকে ১৯৭১ এর মার্চ পর্যন্ত তিনি মিলপাড়া ওয়ার্ড চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন এবং দুই দফায় ১৯৭৪ থেকে ১৯৮২ পর্যন্তকুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাচিত পৌর চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৮৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর তিনি চিকিৎসারত অবস্থায় ঢাকার পি.জি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী, দুই পুত্র, দুই কন্যা রেখে যান। তার জ্যেষ্ঠ পুত্র হাজী মোঃ আখতারুজ্জামান ব্যবসায়ী ও দি কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র পরিচালক এবং মন্ডল ফিলিং স্টেশন এর মালিক। কনিষ্ট পুত্র হাসান জামান লালন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদের সাবেক জি.এস ছিলেন, তিনি ১৯৯৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ভারতের দার্জিলিংয়ের এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। দি কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এর সাবেক পরিচালক মোঃ রাকিবুজ্জামান সেতুর দাদা।